ক্রিকেটারদের চিন্তাটা ভিন্ন। তাঁদের কাছে কেনাকেটার চেয়ে স্বাস্থ্যনিরাপত্তার বিষয়টিই আগে। করোনায় সব থেমে যাওয়ার আগে মোস্তাফিজুর রহমান সস্ত্রীক চলে গেছেন সাতক্ষীরায় নিজের বাড়িতে। আগের দুটি ঈদে স্ত্রীকে বিশেষ উপহার দিয়েছেন। এবার সেই সুযোগটা হচ্ছে না তাঁর। এ নিয়ে কোনো খারাপ লাগাও কাজ করছে না মোস্তাফিজের, ‘বাড়ি আসার পর বাজারে যাই না। করোনার আগেই কেনা শেষ। কিন্তু সমস্যা হয়েছে, ছয় মাস আগে পছন্দের যা কিনেছিলাম, সব ঢাকায়। গ্রামে অনেকে কাপড় ফেরি করে। ওখান থেকে কাপড় কিনে দিয়েছি বউকে। বলেছি, এটা দিয়ে ঈদ পার করে দাও। আর যে পরিস্থিতি, কেনাকাটার মানসিকতা নেই। আগে বেঁচে নিই।’
আল আমিন হোসেন ঝিনাইদহের বাড়িতে গেছেন মার্চে ছুটি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে। বাংলাদেশ দলের এই পেসার জানালেন, কিছু দোকানপাট খোলা পেয়ে কেনাকেটার কাজটা তখনই সেরে ফেলেছেন, ‘বাচ্চাদের জামা-কাপড় কিনে ফেলেছি আরও এক মাস আগে। যখন ঝিনাইদহ এলাম তখন কিছু দোকানপাট খোলা ছিল। ওই সময় সব কিনে ফেলেছি, তখন সংক্রমণের হারও ছিল কম। এখন বাইরে যাওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই।’
শপিংয়ের প্রসঙ্গ তুলতেই মোহাম্মদ মিঠুন উল্টো প্রশ্ন করলেন, ‘কিসের কেনাকেটা?’ বাংলাদেশ দলের এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান যোগ করলেন, ‘যে ঈদের নামাজ পড়া নিয়েই অনিশ্চয়তা আছে, সেই ঈদের কাপড় কেনাকেটা নিয়ে মানুষ কেন ব্যস্ত, সেটিই বুঝতে পারছি না! জীবন বাঁচিয়ে রাখতে কাঁচা বাজারে যেতেই যেখানে ভয় লাগে, সেখানে পোশাক কেনার কথা মাথায় আসে কী করে?’
অবরুদ্ধ সময়টা সাইফউদ্দিনের কাটছে ফেনিতে। ফেনি শহরের দোকানপাট সবই বন্ধ। সামনে যদি দোকান খোলেও সাইফউদ্দিনের ইচ্ছে নেই কেনাকাটা করার, ‘আমি সাধারণত ঈদের কেনাকাটা করি না। দেশের বাইরে গেলে যা কিনি, ওসব দিয়েই চলে। আর এ বছর তো কেনার পরিস্থিতিও নেই। কেনাকেটা না করার পক্ষেই। জীবনটা আগে। পরেও অনেক কেনাকেটা করতে পারব। আর আমাদের জীবনের বড় অংশ জুড়ে ক্রিকেট। সেই ক্রিকেটই বন্ধ, মনে আনন্দ নেই।’
লকডাউনের শুরুতে সিলেটে চলে গিয়েছিলেন আবু জায়েদ। কদিন আগে সিলেটে কিছু দোকান খুলেছে। তবে ঈদের কেনাকেটার চেয়ে করোনা পরিস্থিতি বেশি ভাবাচ্ছে ২৬ বছর বয়সী পেসারকে, ‘কেনাকেটা করার কোনো ইচ্ছেই নেই। আগের দুটো পাঞ্জাবি আছে। সেগুলো ধুয়ে, ইস্ত্রি করে এবার ঈদে পরব। ঈদের কেনাকেটা নয়, আমি চিন্তিত করোনা পরিস্থিতি নিয়ে। কবে আমরা এখান থেকে মুক্তি পাব, সেটি নিয়েই বেশি চিন্তিত।’